Monday, March 28, 2022

নিজের ওপর আস্থা এবং কঠিন পরিশ্রমেই নিলাভ আকাশ আজ সেলিব্রেটি মেকআপ আর্টিস্ট




তিনি টলিউডের প্রশংসিত মেকআপ আর্টিস্ট। । Lakme fashion week হোক বা যে কোন রানওয়ে শো, তাঁর মেকআপের ইন্দ্রজালেই প্রতিষ্ঠা পায় ফ্যাশন ডিজাইনারের নান্দনিকতা। যে কোনো  brand shoot -কে সফল করতে তাঁর শিল্পের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। আবার তিনি bridal makeup artistতাঁর ব্রাশের ছোঁয়াতেই নিজেদের ডি - ডেতে মোহময়ী হয়ে ওঠে নবধূরা। তাঁর পেশা তাঁর কাছে শিল্প। আর এই শিল্পকে ভালোবেসেই আকাশ বাড়ৈ আজকের টলিউডের অতি পরিচিত সেলিব্রেটি মেকআপ আর্টিস্ট নিলাভ আকাশ। তবে  টলিউড ছাড়িয়ে গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর ব্রাইডাল মেকআপের কদর। Bongjournal - এর সাথে চুটিয়ে আড্ডা দিতে গিয়ে জানালেন সেলিব্রেটি মেকআপ আর্টিস্ট হয়ে ওঠার কাহিনী। 



মেকআপ আর্টিস্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখা কবে থেকে শুরু? 

আমার  খুব  ছোট থেকেই সাজগোজের প্রতি ঝোঁক ছিল। নিজেকে ছোট থেকেই সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করতাম। মনে আছে কনো অনুষ্ঠান থাকলে   বাড়িতে দিদিদের বা অন্যান্য বড়দের সাজ নিয়ে যথেষ্ট পরামর্শ দিতাম। 

ছোটবেলা থেকেই জানতাম যে ৯ -৫টার চাকরি আমি করব না। আত্মবিশ্বাস ছিল যে মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবই। তাই বাংলায় স্নাতক শেষ করার পর  মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করি। তবে এটা তো শিল্প। এর জন্য সঠিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। তাই অধ্যাবসায় ছোট থেকে থাকলেও  ক্লাস ইলেভেন থেকেই প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করি। 


শুরুর দিনগুলো কেমন ছিল? 

শুরুর দিকে সব পেশাতেই যুদ্ধ থাকে। এক লাফেই পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করা সম্ভব নয়। ব্যতিক্রম হয়নি আমার ক্ষেত্রেও। প্রথম দিকে আমার যারা সিনিয়র ছিলেন মানে ইন্ডাস্ট্রিতে যারা ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট তাদের অ্যসিসট করতাম। আমি হয়তো ঘুমিয়ে রয়েছি, ১০ মিনিটের মধ্যে কল টাইম দেওয়া হল। তখন ঠিক সেই সময়তেই পৌঁছে যেতে হয়েছে। অনেক সময় কিছু না খেয়েই যেতে হয়েছে। কারণ সঠিক সময় না পৌঁছে যেতে পারলে টিম কিন্তু আমাকে ছেড়ে চলে যেত। তখন ওই বাস ট্রামে ভিড় ঠেলেই যেতে হয়েছে কারণ তখন সহজেই ওলা উবের চেপে যাতায়াত করার ক্ষমতা ছিল না। এরপর সিনিয়ররা ভালোবেসে যতটুকু দিয়েছেন সেইটুকু নিয়েই কাজটা শিখতে চেষ্টা করে গিয়েছি। 

আমার প্রথম  সোলো কাজ ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবেই। পাড়ার চেনা পরিচিতদের মধ্যেই কাজ শুরু করি  মিনিমাম উপার্জনেই। এরপর আমার কাজ ভালো লাগেলে পরিচিতি বারে। ব্যাংগালোর, নাগাল্যান্ড, রাচি, ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে ব্রাইডাল মেকআপের জন্য ডাক পড়ে। 


টলিউডে প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে? 

আট নয় বছর হয়ে গেল এই ইন্ডাস্ট্রিতে। কিন্তু সেই দিনটা এখনও মনে পড়ে। একটি প্রসাধনী কম্পানীর শু্ট ছিল। সেদিন আমি অ্যসিসট করতেই গিয়েছিলাম।সামনে ছিলেন অভিনেত্রী পায়েল সরকার। একটু নার্ভাস তো ছিলামই। ভাবছিলাম কি করে এত বড় মাপের অভিনেত্রীর সামনে নিজেকে প্রেজেন্ট করব। তবে যাই হোক দিনটা ভালোভাবে উৎরে গিয়েছিল। 

এরপর একে একে অনেক সেলেবদের সঙ্গেই কাজ করেছি যেমন কনীনিকাদি, তনুশ্রী চক্রবর্তী। আরও একটা কথা মনে পড়ছে, একদম শুরুর দিকে তনুশ্রীদি বলেছিলেন যে "ইন্ডাস্ট্রিতে সদ্য কাজ শুরু করেছ। ধীরে ধীরে পরিচিতি বাড়বে। মাথা ঠান্ডা রাখবে। তোমার হবে। তুমি অনেক দূর এগোতে পারবে।





তোমার ইন্সপিরেশন? 

আমার গুরু পাপিয়া চন্দ। এছাড়াও রয়েছেন বলিউড লেজেন্ড Mickey Contractor। ওনার মেকআপ করার স্টাইল ভীষণভাবে আমাকে অনুপ্রাণিত করে। টলিউডের দেবীদার মেকআপ করার স্টাইলও ফলো করি। এছাড়াও  ফলো করি আমেরিকান মেকআপ আর্টিস্ট James Charles Dickinson


প্রায় দশ বছর তো হয়ে গেলো। নিজের  achievement -কে কি করে বর্ণনা করবে? 

আমি কিন্তু নিজেকে ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে বেশী সফল মনে করি। অভিনয় যারা করেন তাঁরা তো প্রতিদিনই কোনও না কোনও মেকআপ করছেন চরিত্র ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে। কিন্তু যে মেয়েটি ব্রাইড, সেই মেয়েটির জন্য এই একটি দিনই খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওই  একটি দিনই সে সাজবে যা তার সারাজীবন মনে থাকবে। আমিও তাই বেস্ট দেবারই চেষ্টা করি। আর আমি সাজানোর পর নিজেদের আয়নাতে দেখে যখন তারা বলে ওঠে "like wow", আনন্দে আমাকে জড়িয়ে ধরে তখন মনে হয় এটাই তো আমার সেরা পাওনা। 

এ ছাড়া আমার কাছে কাজ শিখে অনেকেই এখন মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে সফলতা পেয়েছে। তারা যখন আমাকে বলে, দাদা তোমাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। বাড়ির লোক সাপোর্ট করেনি। তবুও তোমাকে ফলো করি, পোস্ট দেখে কাজ শুরু করার সাহস পাচ্ছি তখন খুব ভালো লাগে। 


আচছা মেকআপ আর্টিস্ট নিয়ে কোন ট্যাবু কি এখনও রয়েছে? মুখোমুখি হয়েছ কোনদিন? 

সত্যি কথা বলতে বাবা মায়ের থেকে প্রচুর সাপোর্ট পেয়েছি। বাধা দেননি কনো কিছুতেই। যা করতে চেয়েছি তাই করতে দিয়েছেন। তবে হ্যাঁ আত্মীয় স্বজনরা প্রশ্ন তুলেছেন যে কেন ছেলে হয়ে অন্য চাকরি করবো না। 





এবার কি তাহলে বলিউড ?

হ্যা  নিশ্চই ! ইচ্ছে তো আছে 

যারা  ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট হতে চায় তাদের কি বলবে? 

ধৈর্য  রাখতে হবে। প্রথম দিকেই যদি কেউ মনে করে দুদিন এসেই হাজার হাজার টাকা নিয়ে ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট  হয়ে যাবে তা হলে ভুল করবে। প্রতিদিন নিজের সেরাটা দিয়ে যেতে হবে যতদিন না সফলতা অর্জন করতে পারছ। তারপরও কিন্তু শিখে যেতে হবে। এখন নতুনদের দেখি। তারা আসছে। দুদিন দুটো শুট করছে, portfolio বানিয়ে পোস্ট করে দিচ্ছে। কিন্তু বেস তো তৈরি হচ্ছে না। মনে রাখতে হবে প্রতিটি মেকআপই একজন মেকআপ শিল্পীর কাছে স্বপ্ন। আমার গুরু যিনি ,পাপিয়াদি শিখিয়েছিলেন সব সময় polite থাকতে। নিজের ওপর আস্থা রেখে এগিয়ে চলতে শিখিয়েছেন । এবং নিজের সেরাটা  দিয়ে যেতে বলেছেন। আমি ঠিক সেইভাবেই এগিয়ে গিয়েছি। নতুন যারা আস্তে চাইছে তাদের সেই একই কথা বোলবো 


Do you like our story / Want to share some stories with us then write to us at

bongjournal.info@gmail.com















No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment. Feel free to contact for any queries, suggestions or any proposal.